যশোর একটি অতি প্রাচীন জনপদ।প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়রা ভৈরব নদের তীরে এক সমৃদ্ধ বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে। আনুমানিক ১৪৫০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে পীর খানজাহান আলীসহ বারজন আউলিয়া যশোরের মুড়লীতে ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন।ক্রমে এ স্থানে মুড়লী কসবা নামে একটি নতুন শহর গড়ে ওঠে। ১৫৫৫ খ্রীষ্টাব্দের দিকে যশোর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর-খুলনা-বনগাঁ এবং কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের অংশ বিশেষ যশোর রাজ্যের অর্ন্তভূক্ত ছিল। ১৭৮১ খ্রীষ্টাব্দে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্বপ্রকাশ করে।বর্তমানে যশোর বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক ইউনিট।পৃথিবীর মানচিত্রে যশোরের অবস্থান ২২ক্ক৪৭' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৩ক্ক৪৭' উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮ক্ক৪০' পূর্ব দ্রাঘিমা হতে ৮৯ক্ক৫০' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। যশোর পৌরসভা গঠনের ইতিহাস ও অতি প্রাচীন। আজ থেকে দুইশো ১৭ বছর আগে ১৭৯৩ খ্রীষ্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক চার্টারের মাধ্যমে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতে পৌর প্রশাসনের সুচনা হয়। প্রথমে কলিকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে পৌর প্রশাসন প্রতিষ্টিত হয়। আরো অনেক বছর পর আইনগত ভিত্তি দেয়ার জন্য ১৮৪২ সালে প্রথম মিউনিসিপ্যাল আইন পাশ হয়। এ আইনে কোন শহরের বাড়ীর দুই-তৃতীয়াংশ মালিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে টাউন কমিটি গঠনের বিধান চালু হয়। ১৮৫০ সালে মিউনিসিপ্যাল অক্ট নামে আরেকটি আইন পাশ হয়। এ আইনে পৌরসভা গঠনের উদ্যোগ পৌরবাসীর উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। আইনটি সারা ভারত বর্ষে প্রযোজ্য হলে ও নগন্য সংখ্যক শহরে পৌরসভা গঠিত হয়। ১৮৫৬ সালে টাউন পুলিশ আক্ট পাশ হয়। এ আইনে জেলা ম্যাজিট্রেটদেরকে শহরে পঞ্চায়েত কমিটি গঠন এবং বাড়ী ঘরের উপর শতকরা ৫ ভাগ হারে কর নির্ধারনের ক্ষমতা দেওয়া হয়। করের অর্থ শহরের চৌকিদারের প্রতিপালনে ব্যায় করা হত। বাকি অর্থ কনজারভেন্সী, শহরে সড়কবাতি ও উন্নয়নে ব্যায় করা হত। ১৮৬৪ সালে বেঙ্গল কাউন্সিল ডিষ্ট্রিক মিউনিসিপ্যাল ইমপ্রুভমেন্ট আক্ট পাশ হয়। আইনটি বড় বড় শহরের জন্য প্রযোজ্য ছিল।এ আইনে সরকার মনোনীত সাতজন নগর বাসীকে নিয়ে টাউন কমিটি গঠন করা হত। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা ম্যাজিট্রেট,সিভিল সার্জন ও নির্বাহী প্রকৌশলী পদাধিকার বলে কমিটির সদস্য থাকতেন।কমিটিকে বাড়ী ঘরের উপর শতকরা ৪ ভাগ হারে কর নির্ধারনের ক্ষমতা দেওয়া হয়। করের অর্থ রাস্থাঘাট উন্নয়ন,বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ন্ত্রন, টিকাদান, হাসপাতাল ও চৌকিদার প্রতিপালনে ব্যায় করা হত। ১৮৬৪ সালের আইনে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোর পৌরসভা সাথপিত হয়। স্বাধীনতার পর সকল পৌরসভা ভেঙ্গে দেওয়া হয়। তুলে দেওয়া হয় টাউন কমিটি ও মিউনিসিপ্যাল কমিটির বিভাজন সবগুলোকে পৌরসভার মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালে জনগনের সরাসরি ভোটে যশোর পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস